
সহজ সরল চিন্তাভাবনা বইটি প্রগতিশীল মুক্তচিন্তার লেখক জাহিদ হাসানের নির্বাচিত প্রবন্ধের একটি সংকলন। অন্ধ বিশ্বাস, ধর্মীয় গোঁড়ামি , কুপমুন্ডুকতা, প্রতিক্রিয়াশিলতা, আলৌকিকতা ও কুসংস্কারকে উসকে দেওয়া নিবর্তনমূলক ধ্যান ধারণার বিপরীতে মুক্তচিন্তার যে আদর্শিক সংগ্রাম শুরু হয়েছিল, এ বইয়ের লেখাগুলো তারই নিদর্শন বহন করছে। প্রচলিত ধ্যান ধারণার গডডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো লেখা নয় এগুলো, নয় প্রচলিত বিশ্বাস এবং সিস্টেমের আনত স্তব। এ বইটি বিশ্বাস ভাঙ্গার, নির্মোহ দৃষ্টিতে সমাজ ও ব্যক্তিকে দেখার। সে হিসেবে এ বইয়ের লেখকের ভাবনাগুলো স্বতন্ত্র; অনেকটাই আলাদা সমাজে বিদ্যমান পশ্চাৎপদ ধ্যান ধারণাগুলো থেকে। তাই এ বইয়ের নাম ‘সহজ সরল চিন্তবাবনা ’।
বইটির মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশ ২০২১ সালে হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এর জনপ্রীয়তা যুবকদের মধ্যে খুব বেশি।
যুক্তিবাদ, সংশয়বাদ, মানবতাবাদ, কিংবা ইহজাগতিকতার মত আধুনিক ধারনাগুলো সমাজ সচেতন মানুষের কাছে ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কিন্তু তবুও এ দেশের অধিকাংশ মানুষ ‘বিশ্বাস নির্ভর’ সিস্টেমের আবর্তেই বন্দি। হাজারো প্রচলিত সংস্কার, তুক তাক, অপবিশ্বাস, ব্যক্তিপুজা আর সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ইদানিং যুক্ত হয়েছে বৈজ্ঞানিক মোড়কে পুরে সুবেশিত উপায়ে ভাববাদের পরিবেশন। ভ্রান্ত চিন্তা, কুপমুন্ডুকতা আর অন্ধবিশ্বাস কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে আজকের বাংলাদেশের তথাকথিত প্রগতিশীল নামধারী বুদ্ধিজীবী সমাজকেও। মনীষীদের অনেকেই অনেক ক্ষেত্রেই প্রগতিশীল চিন্তা করেছেন সত্যি, কিন্তু সেই সাথে আবার তৈরী করেছে। এ সঙ্কলনের নির্বাচিত প্রবন্ধগুলোর মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে যুক্তিবাদ বিষয়টি নিয়ে দার্শনিক বিশ্লেষণমূলক লেখা। প্রসঙ্গক্রমে অন্ধ বিশ্বাসের অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব এবং মন্দের যুক্তি ও এসেছে। কয়েকটি প্রবন্ধে যুক্তিবাদী দৃষ্টিতে ধর্ম, নৈতিকতা ও মানবতাকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ‘ধর্ম’ যেহেতু ব্যক্তিগত ব্যাপার তাই ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ধর্মীয় পরিচয় জানানো জরুরি নয় বলে ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদীরা মনে করে। কিন্তু সমস্যা হল, যারা কোন অন্ধবিশ্বাস করে না বা মানেন না তারা চাকুরী বা শিক্ষার ক্ষেত্রে কলামটা খালি রাখতে চাইলেও অতীতে আপত্তি উঠেছে নানা জায়গায়; এমনকি অসম্পুর্ণ বিধায় ফর্ম বাতিল করা হয়েছে। ভারতীয় মানবতাবাদী সমিতি কিভাবে চাকুরীর ফর্মে ধর্মের জায়গায় ‘মানবতা’ লিখবার আইনী অধিকার আদায় করেছে তা লিপিবদ্ধ হয়েছে ‘মানুষের ধর্ম মানবতা’ প্রবন্ধটিতে। লেখাটি বাংলাদেশে যারা স্যেকুলার সমাজ ব্যবস্থা চান- তাদের জন্য একটি প্রেরণা হতে পারে। নৈতিকতার উৎস এবং ভিত্তি যে কেবল ধর্ম নয়, তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে ‘নৈতিকতা ও ধর্ম’ নামক আরেকটি প্রবন্ধটিতে। প্রগতিশীল বিজ্ঞানী ও দার্শনিকেরা যুগে যুগে কিভাবে অন্ধবিশ্বাসের কোপানলে পুড়ে আগ্রাসন ও লাঞ্ছনার স্বীকার হয়েছেন, তা তুলে ধরতে ব্রুনো এবং হাইপেশিয়ার প্রসঙ্গ এসেছে, এদের জীবন ও অবদান নিয়ে লেখা হয়েছে দুটি প্রবন্ধ। এছাড়া সমকামিতা, ডারুইনিজম, ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন এবং ক্ল্যাসিকাল এথেন্সের নারীদের নিয়ে রয়েছে আলাদা তিনটি প্রবন্ধ।প্রবন্ধটি পাঠকদের ভালো লাগবে এবং সংকলনটি বাংলাদেশে মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তা প্রসারে সাহায্য করবে।
অর্ডার করতে ইনবক্স করুন। অথবা যোগাযোগ করুন
নাম্বার- 01611906164
ইমেইল- hasanali360jahid@gmail.com













